বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ০৮:৩৫ অপরাহ্ন

রাজশাহীর চোখ হ্যাটট্রিকে, খুলনার লক্ষ্য দ্বিতীয়

রাজশাহীর চোখ হ্যাটট্রিকে, খুলনার লক্ষ্য দ্বিতীয়

স্বদেশ ডেস্ক:

ঢাকা পর্বে দুই ম্যাচ খেলে দু’টিতেই জিতেছে রাজশাহী রয়্যালস। এবার চট্টগ্রামের মাটিতে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে হ্যাটট্রিক জয়ের স্বাদ নিতে চায় রাজশাহী। সেই লক্ষ্য নিয়ে মঙ্গলবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে দুপুর দেড়টায় মিনিটে খুলনা টাইগার্সের মুখোমুখি হবে রাজশাহী। অপরদিকে, ঢাকায় মাত্র ১টি ম্যাচ খেলেছে খুলনা। জিতেছেও সেটিতে। সেই ধারা ধারা অব্যাহত রেখে চট্টগ্রামের মাটিতে দ্বিতীয় জয়ের স্বাদ নেয়া লক্ষ্য খুলনার।

এবারের বিশেষ বিপিএলের দ্বিতীয় দিনই মাঠে নামে রাজশাহী। ঐ ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ ছিলো মাশরাফি-তামিমের ঢাকা প্লাটুন। বোলারদের দুর্দান্ত নৈপুন্যে ঢাকাকে ১৩৪ রানের বেশি করতে দেয়নি রাজশাহী। এরপর ব্যাটসম্যানদের নৈপুন্যে সহজ জয়ের স্বাদ পায় রাজশাহী। মাত্র এক উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় তারা। আফগানিস্তানের হযরতউল্লাহ জাজাই ৪৭ বলে ৫৬ রান করে রাজশাহীর সহজ জয়ে গুরুত্বপুর্ন অবদান রাখেন।

দ্বিতীয় ম্যাচে রাজশাহীর প্রতিপক্ষ ছিলো সিলেট থান্ডার। প্রতিপক্ষকে ৯১ রানে অলআউট করে দেয় রাজশাহী। ৯২ রানের স্পর্শ করতে মোটেও বেগ পেতে হয়নি তাদের। ৫৫ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রাজশাহী। তাই শতভাগ সাফল্য নিয়েই চট্টগ্রাম পর্ব শুরু করছে রাজশাহী। চট্টগ্রাম পর্বে মোট তিনটি ম্যাচ খেলবে রাজশাহী।

তবে খুলনার বিপক্ষে জয় দিয়ে চট্টগ্রাম পর্ব শুরু করার লক্ষ্য রাজশাহীর। দলের ওপেনার লিটন দাস তেমনই ইঙ্গিত দিলেন, ‘ঢাকায় যা হয়েছে, ওখান থেকে আমাদের এখন পাওয়ার কিছু নেই। আমরা দু’টা ম্যাচ জিতেছি সেখানে, এটাই। এখন যা করণীয়, সেটা আগামীকাল করতে হবে।’

খুলনাকে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ উল্লেখ লিটন বলেন, ‘প্রতিপক্ষ অনেক শক্তিশালী আমার কাছে মনে হয়। তারা অনেক ভারসাম্যপুর্ন দল। যেখানে রিলি রুশো, মুশফিক ভাই, এরপর ফ্রাইলিঙ্ক, আরো স্থানীয় কয়েকটা ভালো খেলোয়াড় আছে। আমার মনে হয় ম্যাচটি প্রতিদ্বন্দিতাপুর্ন ভালোই হবে।’

প্রথম দু’ম্যাচে রাজশাহীর জয়ের পেছনে প্রধান কারিগর ছিলেন দলের টপ-অর্ডাররা। তাই মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যানদের কোন পরীক্ষায় পড়তে হয়নি। তবে এটিকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন লিটন, ‘এটা তো অনেক ভালো ব্যাপার। আমরা টপ অর্ডাররা নিয়মিত রান পাচ্ছি। দোয়া করবেন সামনের ম্যাচগুলোয় যেন এমনই হয় যে, আমরা টপ অর্ডারই ম্যাচ শেষ করতে পারি। নিচের ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং না করতে হয়।’

ভালো শুরু করেও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি লিটন। দুই ম্যাচে তার ইনিংসগুলো ছিলো এমন- ৩৯ ও অপরাজিত ৪৪ রান করেন তিনি। তবে দলের প্রয়োজন মেটাতে পেরেই খুশী লিটন, ‘বড় ইনিংসের টার্গেট তো সব সময়ই সেট করা থাকে। টি-২০ খেলাটা এমন, শুরুতে ব্যাটিং করলে ম্যাচের এক অবস্থা থাকে, টার্গেট বড় হলে অবস্থা এক রকম থাকে। টার্গেট ছোট হলে সিচুয়েশন আরেক রকম থাকে। যদি সুযোগ হয় এ রকম বড় ইনিংস খেলার। আমি চাচ্ছি না যে একশই মারতে হবে। দলের জন্য যেটুকু করার সেটা করতে পারলেই আমি খুশি।’

ভারতের বিপক্ষে ইডেন টেস্টে মাথায় আঘাত পাওয়ার পরের কয়েক দিন অবস্থা কেমন ছিল, এমন প্রশ্নের উত্তরে লিটন বলেন, ‘জীবনে প্রথমবার সুযোগ ছিল গোলাপি বলে খেলার। যেহেতু ম্যাচে মাঠে নেমেও আমি পুরোটা কাভার করতে পারিনি। এদিক থেকে খারাপ লেগেছে। বাদ বাকি কয়েকটা দিন আমি বিশ্রামে ছিলাম। মানসিকভাবে ওইরকম একটা চাপে ছিলাম না। হ্যাঁ, মাথায় একটা বল লাগলে স্বাভাবিক কিছু সিমটম থাকে। এই জিনিসগুলো আমি অনুভব করেছি কয়েকটা দিন। আমাকে সিটি স্ক্যান করতে পাঠিয়েছিল, তারা ঝুঁকি নিতে চাচ্ছিল না। কারণ আমার ওই অবস্থা ছিল না লাগার পর থেকে, আমি উঠে গিয়ে আবার ব্যাটিং করব। আমি যদি ব্যাটিং না করি তাহলে আমার প্রথম ইনিংসের ব্যাটিং লস পুরোটা। দ্বিতীয় ইনিংসে আমাকে যেতে হবে। তাই তারা চিন্তা করেছে আমি যেহেতু প্রথম ইনিংসে আর ব্যাটিং করতে পারব না। তাই তারা মিরাজকে নিয়েছে।’

বিপিএলে ঢাকা পর্বে বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স ছিলো ভালো ছিলো বলে মনে করেন লিটন, ‘আমার মনে হয় স্থানীয়রা ভালোই করছে। মিরপুরের উইকেটে যথেষ্ট পরিমাণে ভালো খেলেছে। কখনোই আমরা এরকম ফেস করিনি। আমি নিজেও অবাক, মিরপুরের উইকেটে ১৫০, ১৭০ রান সহজেই চেজ করছে। যেটা হয় না। কয়েক বছর বিপিএল দেখলে সেটা আপনারা দেখবেন। আমার মনে হয় চট্টগ্রামে খুব ভালো কিছু খেলা হবে।’

ঢাকা পর্বে একটি ম্যাচ খেলেছে খুলনা টাইগার্স। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৮ উইকেটে হারায় তারা। তাই চট্টগ্রামের মাটিতে দ্বিতীয় জয়ে চোখ খুলনার। দলের ওপেনার শাসমুর রহমান বলেন, ‘নিঃসন্দেহে রাজশাহী খুব ভালো ছন্দে আছে। সব বিভাগেই তারা ভাল করছে, ম্যাচ জেতার সক্ষমতা তাদের আছে। পাশাপাশি আমরাও ভালো একটা পরিকল্পনা নিয়ে কাল নামব। তবে যেটা হচ্ছে ক্রিকেট খেলা যে কোন কিছুই হতে পারে। যার যেদিন বেস্ট শট লাগবে সেদিন সবকিছুই পরিবর্তন করার সুযোগ অনেক বেশি। দল হিসেবে আমরাও ভালো দল। চেষ্টা থাকবে প্রথম ম্যাচে যেমন গাণিতিক ক্রিকেট খেলেছি সেই পরিকল্পনাই নিয়েই মাঠে নামব।’

দলের জন্য যতটুকু প্রয়োজন সেটুকু করতে পারলেই খুশী হন শামসুর, ‘আমি যে দলে খেলি সে দলে চাহিদা থাকে আমার রানটা যেন দলে সাহায্য করে। আমিও সেই দিকেই নজর রাখি, সেভাবেই খেলার চেষ্টা করি। আমরা যে দায়িত্ব বা রোল তাতে আমি সবসময় খুব বেশি বল হয়তো পাব না। বেশি সময় ব্যাটিং পাব না তবে পাশাপাশি আমি যতটুকু বল খেলি, পাঁচ বল খেলে ১০, ১২ কিংবা ১৫ রান করি দিনশেষে এটাই উপকারে দিবে। ওপেনার বা ওয়ান ডাউনে যারা খেলে তাদের পঞ্চাশ বা একশ মারার একটা সুযোগ থাকে। আমি যে সময় নামব ওই সময় আমার এতো বড় স্কোর করার সুযোগ থাকবে না। তবে আমি যেটা বললাম আমি যে পাঁচ, ছয় বা ১০ বল খেলব তাতে যেন ১০-১৫ বা ২৫ রান আসে আমার চিন্ত ভাবনা সেভাবেই করছি।’

খুলনা টাইগার্স দল : মুশফিকুর রহিম, শফিউল ইসলাম, নাজমুল হোসেন শান্ত, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব, শামসুর রহমান, সাইফ হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ, শহিদুল ইসলাম, আলিস আল ইসলাম, তানভির ইসলাম, রিলি রৌসু, রবি ফ্রাইলিঙ্ক, মোহাম্মদ আমির, নাজিবুল্লাহ জাদরান, রহমানউল্লাহ গুরবাজ।

রাজশাহী রয়্যালস দল : লিটন দাস, আফিফ হোসেন, আবু জায়েদ চৌধুরী, ফরহাদ রেজা, তাইজুল ইসলাম, অলক কাপালী, কামরুল ইসলাম রাব্বি, ইরফান শুক্কুর, মিনহাজুল আবেদীন আফ্রিদি, নাহিদুল ইসলাম, রবি বোপারা, হজরতউল্লাহ জাজাই, মোহাম্মদ নওয়াজ, মোহাম্মদ ইরফান।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877